Netaji Subhash Chandra Bose is always in the seat of hero in the minds of most Bengalis.
না জানা কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলে রাখা প্রয়োজন যে আমার মত অত্যন্ত সাধারণের পক্ষে এসব লিখতে গেলে এমন কারো সঙ্গে আলাপ করতে হবে, যাঁদের ছাড়া একটি শব্দ লেখা যাবে না। এক্ষেত্রে দেশনায়ক নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস এর প্রথম পর্বে “খোঁজ 24” দুজন মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। একজন চলচিত্র নির্দেশক ও নেতাজী গবেষক শ্রী অম্লান কুসুম ঘোষ অন্য জন ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক শ্রী কপিল কুমার।
নেতাজির কথায় আসি। কিশোর সুভাষচন্দ্র, বয়স ১৪ বা ১৫, স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলীর একটি অংশ কোন এক বন্ধুর বাড়িতে পড়েন। এটা কটকে থাকার সময়ের ঘটনা। সেই রচনাবলী কিশোর সুভাষের মনে একটা দাগ কেটে যায়। পরবর্তী কালে তার প্রভাব আমরা দেখি ওনার সিঙ্গাপুরে বসবাসের সময়। এই তথ্য আমরা জানতে পারি শ্রী অম্লান কুসুম ঘোষের সঙ্গে আলাপচারিতায়।
১৯৩৯ সাল, নেতাজী থাইল্যান্ডে - সেখানের রাজা, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছেন, তখন তাঁর উদ্দেশ্য আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন এবং তার স্বীকৃতি। অধ্যাপক কপিল কুমার এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে আলোকপাত করেন। ওই সাক্ষাৎকার থেকে আমরা জানতে পারি আজাদ হিন্দ ফৌজ এর দায়িত্ব প্রাথমিক পর্যায় কার উপর ন্যস্ত হবে, এটাও আলোচনা হয়। রাজা মহেন্দ্র প্রতাপের কথা প্রথমে ভাবা হয়েছিল, কিন্তু বিশেষ কারণে সেটা সম্ভব হয় নি। সেই দায়িত্বে বর্তায় মোহন সিং এর উপর।
নেতাজী যখন যুবক, সে সময় আনন্দময়ী মা একবার দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে এসেছিলেন। নেতাজী সেখানে আনন্দময়ী মা র সঙ্গে দেখা করেন। মা নেতাজীকে বলেন তুমি তো খুব ভালো বক্তৃতা কর, এখন কিছু বল আমরা শুনি। নেতাজী অবশ্য কোন বক্তৃতা করেন নি। মায়ের সঙ্গে নেতাজির অন্য বার্তালাপ হয়। এ কথা আমরা জানতে পারি নেতাজী গবেষক শ্রী অম্লান কুসুমের থেকে।
শ্রদ্ধেয় কপিল কুমার এক সাক্ষাৎকারে জানান যে থাইল্যান্ডে নেতাজী থাকার সময়, ১৯৩৯ সাল নাগাদ, জাপানের মেজর ফুজীয়ারা, নেতাজী, সত্যানন্দ পুরী, গদার সিং, কাপাশী, ঈশ্বর সিং প্রমুখ নেতারা একসঙ্গে একটা বৈঠক করেন। সেখানে মেজর ফুজীয়ারা একটা প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন আলাদা আলাদা সংগঠন তৈরী না করে একটা সংগঠন করা উচিত। সবাই একমত হন এবং Indian National Army র বীজ বপন হয়। এরপর প্রীতম সিং ও মেজর ফুজিয়ারা মালয়শিয়া যাত্রা করেন। সেখানে মোহন সিং এর সঙ্গে কথা বলেন। মোহন সিং INA র দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। মোহন সিং ছিলেন INA র প্রথম কমান্ডার - ইন - চিফ।
নেতাজির বক্তৃতার কথা আগেই বলেছি। একটা উদাহরণ দিই। অধ্যাপক কপিল কুমার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন গরোক্ষপুর নিবাসী ভাইয়ানাথ তেওয়ারিজীর কথা -- যিনি সেই সময় থাইল্যান্ডে থাকতেন। কৃষি এবং গো পালন ছিল তাঁর জীবিকা। আনুমানিক ২০ একর জমি ছিল। থাইল্যান্ডের Royal Hotel এ ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে নেতাজির ভাষণ শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের মেয়ে ও ছেলেদের নেতাজির হাতে তুলে দেন। ভাইয়ানাথ জী চেয়েছিলেন তাঁর সন্তানেরা আজাদ হিন্দ ফৌজ যোগ দিক। নিজের ২০ একর জমি আজাদ হিন্দ ফৌজে উৎসর্গ করেন।
নেতাজির জীবনে স্বামী বিবেকানন্দ ও রামকৃষ্ণ দেবের প্রভাব ছিল। নেতাজী তখন সিঙ্গাপুরে। প্রায় রোজ গভীর রাতে সিঙ্গাপুর রামকৃষ্ণ মিশনে যেতেন। সেই মিশনের প্রধান স্বামী ভাস্বরানন্দ মহারাজ, যাকে সবাই বুদ্ধ মহারাজ বলে জানতেন, নেতাজীকে গর্ভ গৃহ খুলে দিতেন, নেতাজী সেখানে বসে ধ্যান করতেন। এই তথ্য আমরা শ্রী অম্লান কুসুম ঘোষের কথপোকথন থেকে জানতে পারি। বুদ্ধ মহারাজ নেতাজীকে একটি জপমালা ও একটি চণ্ডী উপহার স্বরূপ দেন। ১৯৮৫ সালে ফৈজাবাদে গুমনামী বাবা মহাকাল যখন মারা যান, সেখান থেকে সেই জপমালা ও চণ্ডী পাওয়া যায়।
বিশ্ববরেণ্য বীর সেনানীর বিমান দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মহাত্মা গান্ধী নেতাজির বাড়িতে একটি টেলিগ্রাম করেন। সেখানে তিনি নেতাজির বাড়ির লোকেদের অনুরোধ করে বলেন তারা যেন সুভাষের কোন পারলৌকিক ক্রিয়া না করে। সুভাষ মারা যেতে পারে না।
নেতাজী শুধু বাঙালির নয়, সকল ভারতীয়র হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে আছেন -- থাকবেন।
খুব শিঘ্রই আসছি দেশনায়ক নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস এর দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে ...
সুত্রঃ খোঁজ 24 নিউজ
রিপোর্টারঃ কৌশিক চ্যাটার্জি কলমেঃ রাজকুমার মুখার্জী
COMMENTS