২০০৪ সালের মাঝামাঝি এক সকালে বাইকটা স্টার্ট করে বের হবার মুখে গিন্নি ডেকে বললো - এই যে শুনছো ? পার্সে দেড় হাজার টাকা ভরে দিয়েছি, ডিউটি থেকে ...
২০০৪ সালের মাঝামাঝি এক সকালে বাইকটা স্টার্ট করে বের হবার মুখে গিন্নি ডেকে বললো -
এই যে শুনছো ? পার্সে দেড় হাজার টাকা ভরে দিয়েছি, ডিউটি থেকে ফেরার পথে ছেলের স্কুলের মায়নাটা দিয়ে এসো কিন্তু থানায় গেলে তো একটা সংসার আছে বলে মনে থাকে না।
মাথা নেড়ে বাইক নিয়ে রওনা হলাম। গন্তব্য পোস্তা থানা। থানায় এসে প্রথমে পরিস্থিতিটা একটু বোঝার চেষ্টা করলাম সব ঠিকঠাক আছে কিনা! অবজার্ভেশন করে বুঝলাম সব নর্মাল। রাতে কোনো বড় রকম ঝামেলা টামেলা হয় নি। সেরকম কোনো ঝামেলা হলে আবার মর্নিং শিফ্ট অফিসারের অনেক দায়িত্ব বেড়ে যায়।যাইহোক, নাইট ডিউটি অফিসারের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নিয়ে নিজের টেবিলে বসে পেন্ডিং কাজগুলোতে মনোনিবেশ করার চেষ্টা করছি আর মনে মনে ভাবছি, আজ যেন এলাকায় কোনো ঝামেলা না হয়, তাহলে সময় মতো থানা থেকে বের হওয়া যাবে না, ছেলের স্কুলের ফি টা জমা না দেওয়ার জন্য বউয়ের মুখ ঝামটা অবধারিত শুনতেই হবে। কোনো উপায় থাকবে না। ইতিমধ্যে বড়বাবুও থানায় এসেছেন, প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছেন। থানার সব স্বাভাবিক কাজকর্ম চলছে, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম সাড়ে এগারোটা বাজতে চলেছে। আর সাড়ে তিন ঘন্টা কাটাতে পারলেই আমার দায়িত্ব শেষ হবে। কিন্তু যা ভাবা যায় তাই কি আর হয়,,! পুলিশের চাকরিটাই তো অনিশ্চয়তায় ভরা। এগুলো মেনেই নিয়েই চাকরিটা করতে হয়। কিচ্ছু করার নেই।এইসব ভাবার মাঝেই আমার সব পরিকল্পনায় জল ঢেলে সেরেস্তার ডিউটি ASI এসে জানালেন, কিছুক্ষণ আগে সোনাপট্টিতে এক দোকানে কেপমারি হয়েছে,,কিন্তু আসামী ধরা পড়ে গেছে স্যার, ওকে দোকানেই বসিয়ে রেখেছে তবে আসামী একজন মহিলা কিন্তু।
এই হলো এক অসুবিধে। অভিযুক্ত মহিলা হলেই নানান নিয়মকানুন মেনে কাজ করতে হয়, নাহলে সমূহ বিপদ। যাইহোক বড়বাবুকে জানিয়ে সাথে একজন লেডি কন্সটেবলকে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলাম। দেখলাম একটি মেয়ে ভয়ে কাঁচুমাচু হয় বসে আছে, বয়স বছর তিরিশের কোঠায় হবে। বেশভূষা দেখে খুবই সাধারণ মনে হলো। চেহারাতে অভাবের ছাপ স্পষ্ট।দোকানের মালিকের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ জেনে এবং প্রয়োজনীয় তদন্তের কাজ সেরে মেয়েটিকে নিয়ে থানায় ফিরে বড়বাবুকে সব জানালাম। মনে মনে ভাবছি, এই হলো পুলিশের চাকরি, ভাবি এক আর হয় অন্যকিছু। যাইহোক সেগুলো নিয়ে ভাবলে তো চলবে না। মাথা থেকে সেসব সরিয়ে নিজের টেবিলে বসে মেয়েটিকে আমার ঘরে আনতে বললাম। লেডি পুলিশ মেয়েটিকে নিয়ে ঘরে এলো। দেখলাম মেয়েটি ভয়ে রীতিমতো কাঁপছে। উল্টো দিকের চেয়ারে ওকে বসতে বলে লেডি পুলিশকে ওকে এক গ্লাস জল দিতে বললাম। জলের গ্লাসটা পেয়ে কাঁপা হাতে ঢক্ ঢক্ করে নিমেষে সবটা জল খেয়ে ফেললো। জলটা খেয়ে মনে হলো কিছুটা ধাতস্থ হলো। এবার আমি যতটা কঠিন হওয়া যায় সেভাবে ওকে বললাম -
এরকম কারবার কতদিন হলো চালাচ্ছেন ?
এতক্ষণ ধরে চুপ করেই ছিল, কিন্তু এই কথা শুনে এবার হাউ হাউ করে কেঁদে উঠে বললো -
না স্যার আমি এসব করি না, আমি চোর নই।
আমি একটু ধমকের সুরেই বললাম -
এসব ন্যাকামো করবেন না। সবাই ধরা পড়ার পর এসবই বলে থাকে। যদি বাঁচতে চান তবে সব কিছু সত্যি বলুন,, তাহলে আমার সাহায্য পাবেন, নতুবা আপনার রেহাই নেই।
এরপর ওর বয়ান অনুযায়ী যা শুনলাম -
আমি একজন বিবাহ বিচ্ছিন্না, নাম রীতা দাস(পরিবর্তীত), পাঁচ বছরের একটা ছেলে আছে। বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে অসুস্থ বিধবা মায়ের সাথে শ্রীরামপুরে থাকি বছর দুয়েক হলো। সংসার চালানোর জন্য আয়ার কাজ বেছে নিয়েছি।বেশ কিছুদিন ধরে পোস্তা থানা এলাকা বড়তলা স্ট্রিটে এক বাড়িতে একজন বৃদ্ধার দেখাশোনার কাজে নিযুক্ত ছিলাম। কিন্তু গতকাল সেই বৃদ্ধার ভীষণভাবে শারীরিক অবনতি হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।তাই বাড়ির লোক আমায় কাজে না রেখে পাওনা টাকা পয়সা দিয়ে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। নিরুপায় হয়ে বাড়িতে যাবার উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সে সময় এক ভদ্রলোক আমাকে ওভাবে মনমরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে এসে বোন বলে সম্বোধন করে জানতে চায় আমি কেন এভাবে দাঁড়িয়ে আছি,,? ওর চেহারা বেশভূষা ও কথাবার্তায় আমি বিশ্বাস করে ওকে আমার সব কথা খুলে বলি। আমার সব কথা শুনে সে বলে যে ওরও অসুস্থ বৃদ্ধা মা বাড়িতে রয়েছে, একজন আয়া ওর ভীষণ দরকার। ওদের বাড়ি খুব কাছেই বড়বাজার এলাকায়। যদি আমি রাজি থাকি তবে সে আমাকে কাজে নিতে রাজি আছে। আরো বলে যে, আজ ওদের বিবাহ বার্ষিকী। স্ত্রীকে একটা সোনার চেন উপহার দেবে বলে এখানে এসেছে। আমি চাইলে আজ থেকেই সে আমাকে কাজে রাখতে পারে। এরকম একটা প্রস্তাবে আমি রাজি হয়ে যাই। তারপর সে আমাকে নিয়ে ওই সোনার দোকানে আসে চেন কেনার জন্য। দোকানদারের কাছে আমাকে ওর বোন হিসেবে পরিচয়ও দেয়। অনেকগুলো চেনের মধ্যে দুটো চেন পছন্দ করে, তবে একটা চেন নেবে দেখে এবং পছন্দ করতে না পেরে বাড়িতে স্ত্রীকে দেখিয়ে আনবে বলে দোকানে আমাকে জামিন হিসেবে রেখে চেন দুটো নিয়ে চলে যায়। যেহেতু প্রথমেই আমাকে বোন হিসেবে পরিচয় দেওয়ায় দোকানদারও কোনো আপত্তি করে নি। আমিও ওই অল্প সময়ে সবটা বুঝে উঠতে না পারায় আমিও কিছু বলতে পারিনি। প্রায় দু ঘন্টা পার হয়ে যাবার পরেও সে ফিরে না আসায় বুঝতে পারি আমি এক ঠগের পাল্লায় পড়েছি। কি করবো বুঝে উঠতে না পেরে এই বিপদ থেকে মুক্তি পাবার জন্য আস্তে আস্তে দোকান থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করায় দোকানদার আমাকে চোর ভেবে ধরে ফেলে এবং আপনাদের হাতে তুলে দেয়।
এতক্ষণ পুরো ঘটনাটা চুপচাপ শুনছিলাম। হঠাৎ মেয়েটি চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরে হাউহাউ করে কেঁদে ওঠায় আমি যেন সম্বিত ফিরে পেলাম, ইতস্ততও বোধ হলো। পা সরিয়ে নিয়ে আমি ওকে বললাম -
আপনার কথা যদি সত্যি হয় তবে অবশ্যই আমি আপনাকে সাহায্য করবো। কিন্তু মিথ্যে হলে আপনি কিন্তু খুব বিপদে পড়বেন।
এই কথা বলে ওকে লেডি পুলিশের হেফাজতে রেখে একজন কন্সটেবলকে সাথে নিয়ে তদন্তে বের হলাম। প্রথমেই ও যেখানে কাজ করতো সেই বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখলাম মেয়েটি যা যা বলেছে সবই ঠিক। পাশাপাশি মেয়েটি সম্পর্কেও খোঁজ নিয়ে জানলাম, ওই বাড়ির লোকের কোনোই অভিযোগ নেই বরং অবাক হয়েছে ওর বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ শুনে।
ততক্ষণে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চলেছে। খেতে আর ইচ্ছে করছে না কিছুই। দেরি না করে বড়বাবুকে জানিয়ে ওখান থেকেই ওর বাড়ি শ্রীরামপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। শ্রীরামপুরে পৌঁছে কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করে মেয়েটির বাড়ির হদিস বের করা সম্ভব হলো। টালির একচালা ঘর। দরমার বেড়া, তাও বহু পুরোনো। দীর্ঘদিন ঘরের সংস্কার না হওয়ায় পুরোপুরি জরাজীর্ণ অবস্থা। দরজার সামনে বসে বছর পাঁচেকের একটা ছেলে,, একটা ভাঙা খেলনা গাড়ি নিয়ে খেলছে। পাশের বাড়ির একজনের সাহায্যে ঘরে ঢুকলাম। গাড়িতে আসতে আসতে আমার সিভিল শার্টটা ইউনিফর্মের ওপর চাপিয়ে নিয়েছিলাম। আমার কন্সটেবলও তাই করেছিল। ঘরে ঢুকে দেখলাম সারা জায়গায় অভাবের ছাপ স্পষ্ট। একটা তক্তপোশে এক শীর্ণকায় বৃদ্ধা শুয়ে। দেখেই বুঝতে পারলাম ভীষণভাবে অসুস্থ উনি। ইতিমধ্যে ওই বাচ্চা ছেলেটিও আমাদের সাথে পায়ে পায়ে ঢুকে পড়েছে। কন্সটেবলকে একটা ক্যাডবেরি চকলেট আনতে পাঠালাম। বেশি কথা না বাড়িয়ে বৃদ্ধাকে বললাম -
আমি শ্রীরামপুরেই থাকি। আপনার মেয়ে আমাকে চেনে। উনি কাজের চাপে কয়েকদিন আসতে পারবেন না। তাই সেই খবরটা দিতে আমাকে পাঠিয়েছেন, এই কথা বলে পার্স থেকে বউয়ের দেওয়া টাকা থেকে এক হাজার টাকা বের করে বৃদ্ধার হাতে দিয়ে বললাম -
কাজের চাপে কয়েকদিন উনি আসতে পারবেন না দেখে এই টাকাটা আমার হাত দিয়ে পাঠিয়েছেন, এটা রাখুন।
ইতিমধ্যে ক্যাডবেরি পেয়ে বাচ্চাটার সাথে কন্সটেবলের বেশ বন্ধুও হয়ে গেছে।
আর বেশি দেরি না করে বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাম। আমার যা জানার সেটা তো সব জানাই হয়ে গেছে। ফিরে এসে বড়বাবুকে পুরো ঘটনাটা পরিষ্কার করে জানালাম। আমাদের বড়বাবু খুবই বিচক্ষণ এবং সহানুভূতিশীল লোক। সব শুনে বললেন -
এই মুহূর্তে তো কিছু করার নেই। মামলা করতেই হবে। মেয়েটিকে পুলিশ রিমান্ডে নিন। তারপর যা হয় করা যাবে।
এরপর যা যা করণীয়, কাগজপত্র রেডি করতে করতে রাত দশটা। বাড়িতে ফিরে এলাম। নাঃ,, আমার বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে বউ আর কিছু বলে নি। আমিও কিছু না বলে খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে চা খেতে খেতে গতকালের সব ঘটনা শোনার পর গিন্নির কাছ থেকে মুখ ঝামটার বদলে প্রশংসাই পেলাম। যাহোক, স্নান খাওয়া দাওয়া সেরে থানায় এসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকমতো গুছিয়ে লাল বাজার লক আপ থেকে মেয়েটিকে নিয়ে কোর্টে হাজির করলাম। ওকে ওর বাড়ির সম্পর্কে কোনো কথাই বলিনি। দু দিনের পুলিশ কাস্টডির আদেশ হওয়ায় আবার ওকে লাল বাজারে রেখে থানায় ফিরে এলাম। ইতিমধ্যে আমার বড়বাবু লালবাজারের সাথে যোগাযোগ করে বিভিন্ন সোর্সের মারফত কিছু ইনফরমেশন যোগার করে আমাকে দিলেন তদন্তটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য। এরপর মাস খানেক কেটে গেছে। জোর তদন্ত চালিয়ে সেই আসামি কে পাকড়াও করা সম্ভবও হয়েছিল। চেন দুটোও উদ্ধার করেছিলাম। পরবর্তীতে মেয়েটিকে মামলা থেকে খালাসও করা হয়েছিল। কাজেই মনে একটা প্রশান্তিও ছিল।
ইতিমধ্যে প্রায় ছয় মাস অতিক্রান্ত। আরো অন্যান্য সব কাজের চাপে সেই মেয়েটির কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। একদিন বিকেলে ডিউটি শেষে বাড়ি ফিরবো বলে থানার বাইরে বের হয়ে এক কলিগের সাথে কথা বলছি। দুর থেকে দেখছি ওই মেয়েটি তার ছেলেকে কোলে নিয়ে আমার দিকেই আসছে। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম -
আপনি এখানে কেন ?
উনি নমস্কার জানিয়ে বললেন,,
আজ আমার ছেলের জন্মদিন, তাই এলাম।
এই কথা বলে ছোট একটা টিফিন বাক্স আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন -
একটু পায়েস বানিয়ে এনেছি, যদি আপনি খেতেন তাহলে আমাদের খুব ভালো লাগতো।
সে মুহুর্তে কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। একটা অন্যরকম অনুভূতি ভীষণভাবে অনুভব হলো, বললাম -
কেন খাবো না? দিন তাড়াতাড়ি, আমি তো পায়েস খুবই ভালোবাসি।
মেয়েটি পায়েসের পাত্রটা এগিয়ে দেওয়ার সাথে এক হাজার টাকাও আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন -
আমি এখান থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে গিয়ে সব শুনেছিলাম। আমি মাকে সব সত্যি কথাগুলোই বলেছি। সব শুনে মা আপনাকে একবার দেখতে চেয়েছিল, আর বলেছিল যদি পারিস ওনার টাকাটা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করিস। তাই টাকাটা নিয়ে এসেছি। আপনি কিন্তু ফিরিয়ে দেবেন না।
আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে ভাবছিলাম, এই দুনিয়াতে এরকম মানুষও আছে ? আজ যদি এই মেয়েটিকে চোর হিসেবে সাব্যস্ত করে মামলার মাধ্যমে দায় ঝেড়ে ফেলতাম তবে সেটা কতটা অন্যায় হতো ভাবতেই একটা ভয়ের শিহরণ শিঁড়দাড়া বেয়ে নেমে গেল।
ওর হাত থেকে টিফিন বাক্সটা নিয়ে দু চামচ পায়েস খেলাম। দেখলাম ওদের খুশি মুখটা। মায়ের সম্মান রাখতে টাকাটাও ফেরত নিলাম। বাক্সটা ফিরিয়ে দেবার সময় ছেলেটির হাতে ওই টাকাটা গুঁজে দিয়ে বললাম -
এটা ওর জন্মদিনের উপহার। ওকে এই টাকা দিয়ে কিছু কিনে দেবেন। আর একদিন সময় করে আমি আপনার মায়ের সাথে দেখা করে আসবো।
একটা বিষন্ন হাসি মুখে নিয়ে মেয়েটি বলল,, সেটার আর দরকার হবে না স্যার। গত তিন মাস আগে মা আমাদের একা রেখে অজানা দেশে চলে গেছে।
কাঠের পুতুলের মতো স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে আমি,, জানিনা কতটা সময় পার হয়েছিল। সম্বিত ফিরলো যখন শুনলাম -
সন্ধ্যে হতে চললো স্যার,এবার তাহলে আমরা আসি ?
আমি শুধু মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে ছিলাম হয়তো। কখন যেন আমার দু চোখের কোণ জলে ভরে উঠেছিল টেরও পাই নি। সবার অলক্ষ্যে রুমাল দিয়ে মুছে ফেলে নিজের মনকে প্রবোধ দিয়ে নিজের কাছেই প্রশ্ন রাখলাম,,,আমি কাঁদছি কেন? পুলিশের তো কাঁদতে নেই...
কলমেঃ অমিতাভ চক্রবর্তী

COMMENTS