শ্বাস্বতী চ্যাটার্জি , কলকাতাঃ পাশ্চাত্য দার্শনিক কার্ল মার্কস বলেছিলেন,পুঁজিবাদী সমাজের যখন চূড়ান্ত বিকাশ ঘটবে তখন ভোগবাদের কারণে মানুষ সম...
শ্বাস্বতী চ্যাটার্জি , কলকাতাঃ পাশ্চাত্য দার্শনিক কার্ল মার্কস বলেছিলেন,পুঁজিবাদী সমাজের যখন চূড়ান্ত বিকাশ ঘটবে তখন ভোগবাদের কারণে মানুষ সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হতে এমন একটা পর্যায়ে আসবে তখন মানুষ একদম 'একা'।
ইউরোপ আমেরিকার মতো সেই অবস্থা ভারতের মেট্রো শহরগুলোতে হওয়া শুরু করেছে। তারই কারণে দিল্লিতে তৈরি হলো এক নতুন কম্পানি - যার নাম ' সুখান্ত ফিউরেনাল ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড'। এদের কাজ আসলে অর্থের বিনিময়ে সমাজ সেবা।
বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে মরে পড়ে থাকে মানুষ। পচা গন্ধে টনক নড়ে সমাজের। কিন্তু শেষকৃত্য কে করবে? ইউটিউব-ফেসবুকের দুনিয়ায় পাড়ার ছেলেরা বসে নেই, সকলেই ‘কর্মঠ’। ডাক দিলেই কোমরে গামছা বেঁধে শ্মশানে ছুটবেন না। এমত অবস্থায় সঙ্গে আছে শেষকৃত্যের সংস্থা। ঠিক যেমন দিল্লির সুখান্ত ফিউনেরাল ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড (Sukhant Funeral Management Private Limited)। রাজধানীর প্রগতি ময়দানে চলছে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশানাল ট্রেড ফেয়ার। সেখানে অংশ নিয়েছে তারা। যাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম দেখে চমকে গিয়েছে মেলা দেখেত আসা জনতা।
কোম্পানির পক্ষ থেকে এই ট্রেড ফেয়ারে অংশ নিয়ে জানানো হচ্ছে,শুধু একটা ফোন করলেই সব মিলবে।তবে তার জন্য ভালো পারিশ্রমিক দিতে হবে।ওরা নিজেদের কোম্পানির কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছে। তাদের স্টলে মরদেহ রাখার ক্যাসকেট প্রদর্শন করা হয়েছে। বস্তুত দিল্লির বিখ্যাত বাণিজ্য মেলায় এবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে তারা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও সুখান্তের স্টলের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
মৃত্যুর পরে সেই ব্যক্তির দাহকাজ থেকে শুরু করে প্রয়োজনে মুখাগ্নি,শ্রাদ্ধ সব কাজই ওরা করে দেবে।অন্তেষ্টিক্রিয়ার মূল্য বাবদ গ্রাহক পরিবারটির কাছ থেকে ৩৮ হাজার টাকা নিয়ে থাকে তারা। সংস্থাটি জানিয়েছে, তাঁরা পুরোহিত, খৌরকর্মী, কফিন, এমনকী মৃতদেহকে কাঁধ দেওয়ার লোকের ব্যবস্থা করবে। এমনকী নিয়ম মেনে অস্থি বিসর্জন পর্যন্ত করবে সংস্থাটি।
সূত্রের খবর,সংস্থাটি তুলনামূলক নতুন হলেও ইতিমধ্যে ৫০ লক্ষ টাকা মুনাফা করেছে। আর ক’দিনের মধ্যে সুখান্ত ফিউনেরাল ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ২ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা লক্ষ্য মাত্রায় পৌঁছে যাবে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলছে। একদল আধুনিক শেষকৃত্যের ব্যবসার ভাবনাকে প্রশংসা করলেও আরেক দল বিরূপ সমালোচনা করছে। তাদের বক্তব্য, মৃত্যু নিয়ে ব্যবসা মেনে নেওয়া যায় না।
যদিও নাগরিক মহল বলছেন,পরিস্থিতি পরিবেশ ও সামাজিক অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে এই ধরনের কম্পানির খুব দরকার।তাঁদের বক্তব্য সন্তানহীন বা সন্তানেরা বিদেশে থাকে এমন মানুষের প্রয়াণ ঘটলে সত্যি এখন লোক পাওয়া যায় না। নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির পরিণতি ওই দিকেই যাচ্ছে।তাই চাই আরো এই ধরনের সংস্থা।





COMMENTS