Manchasha Rural Tourism.Approximately 3 hours drive from Kolkata. Manchasha has left no stone unturned to make your Bengali-bass happy and authentic.
বং 24 ডেস্ক: নামটা একটু অন্যরকম লাগলেও , ১/২ দিনের জন্য মন ভালো করে এই জায়গা। যদি শহরের ব্যস্ততা, কোলাহল থেকে দূরে একটু নিরিবিলিতে সময় কাটাতে চান তাহলে কলকাতার অদূরেই রয়েছে ছবির মতো সাজানো গ্রামীণ পর্যটন কেন্দ্র। যদিও বাঙালির ‘উইকএন্ড ডেস্টিনেশন’ মানেই দিঘা বা মন্দারমণি। তবে শীতের আমেজ গায়ে মেখে গ্রামীণ কোলাহলমুক্ত পরিবেশে দুটো দিন কাটিয়ে আসতে চাইলে তার জন্য একদম আদর্শ জায়গা হল পাউসি গ্রাম যেখানে অবস্থিত মনচাষা রুরাল ট্যুরিজম (Monchasha Rural Tourism)। কলকাতা থেকে মোটামুটি ৩ ঘন্টার পথ। আপনার বাংলা-বাস যাতে সুখের হয়, আর একই সঙ্গে হয় খাঁটিও, তার জন্য কোনও প্রচেষ্টাই বাকি রাখেনি মনচাষা। গাড়ি থেকে নেমে যখন পায়ে পায়ে এগিয়ে যাবেন খড়ের চালার ঘরে, বিস্ময় আরও বাড়বে। দেখবেন, শুধু বাইরেটাই নয়, গৃহসজ্জাতেও খাঁটি গ্রামবাংলাকে আপনার হাতে তুলে দিচ্ছে এই নিভৃতির আসর।
তার পর ইতি-উতি চোখ রাখা! ঘন মেঘের নীলে, টলটলে ঝিলের জলে, মাঠের সবুজে, ফুলের রঙিনে। মনচাষা সত্যি বলতে কী আদপেই হইচই করার জায়গা নয়। বরং, সব হইচই থেকে পালিয়ে গিয়ে শান্তিতে লুকিয়ে পড়ার জায়গা। যা বাঙালি হিসেবে আপনাকে আপনার হারিয়ে যাওয়া পরিচিতি ফিরিয়ে দেবে ষোল আনা।
ভাবছেন, বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগবে মনচাষায়?তা কিন্তু নয় বরং আপনার জন্য রয়েছে সহজিয়া, গ্রামবাংলার লুপ্তপ্রায় সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু। আপনার বাংলার হাতের কাজ স্মারক হিসেবে সংগ্রহের জন্য রয়েছে নব্য নকশি! রয়েছে আমার বাংলা, যা বাংলার গ্রামজীবনের নানা হারিয়ে যাওয়া জিনিস মেলে ধরবে আপনার চোখের সামনে। ঢেঁকি থেকে তাঁত- বাদ যাবে না কিছুই!
আর রয়েছে খাওয়া-দাওয়া। কলমি শাক, গয়না বড়ি, চচ্চড়ি, ঘণ্ট, ছেঁচকি, ডালনা, চোখা, অম্বল- যেমনটা বিশুদ্ধ গ্রামবাংলার পাতে পড়ত, তাই তাই চেখে দেখার সুযোগ পাবেন আপনিও!
ব্যাপারটা ভাল লাগলে শুধু যাওয়ার দিনটা ঠিক করে ফেলুন। জানিয়ে রাখলে মনচাষাই নিজেদের গাড়ি পাঠিয়ে আপনাকে রিসর্টে নিয়ে আসবে। অথবা আপনি নিজেও কালীনগর বাস স্টপ থেকে ট্রেকার ভাড়া করে পাউসি পৌঁছে শরীর ফেলতে পারেন মনচাষায়।
ছায়া-ঘেরা শান্তির মাটির খড়ের চালাওয়ালা ঘর, ঢেকিছাঁটা চাল, পুকুরের মাছ, বাড়ির সামনে ফুলের বাগান, কাঁসার বাসনে পঞ্চব্যঞ্জন খাওয়াদাওয়া— সব মিলিয়ে স্বপ্নের মতো সাজানো-গোছানো গ্রাম্য মনোরম ‘উইকএন্ড ডেস্টিনেশন’ কন্টাইয়ের মনচাষা। সকালের কুয়াশামাখা পরিবেশ, টলটলে ঝিলের জল, মাঠের সবুজে, ফুলের বাহারি রঙে চোখ-মনের আরাম পাবেন মুহূর্তের মধ্যে। এর সঙ্গে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের হাতের কাজের স্মারক, রায়বেঁশে নাচ, বাউল দরবেশের গানে মন অনায়াসে ভুলবে সব ক্লান্তি। মনে আসবে আনন্দের হিল্লোল। বিশেষকরে যারা ছোটো বেলায় গ্রামে বেড়ে উঠেছেন তারা ফিরে যাবেন নিজের শৈশবে।
যাওয়াঃ কলকাতা থেকে দিঘা যাওয়ার যে কোনও বাসে কালীনগর বাস স্টপে নেমে সেখান থেকে ট্রেকার ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন মনচাষায়। মনচাষা আসলে রিসর্টের নাম, গ্রামের নাম পাউসি। ট্রেনে গেলে কন্টাই স্টেশনে নেমেও সেখান থেকে ট্রেকার ভাড়া করে মনচাষায় যাওয়া যেতে পারে।
থাকা-খাওয়াঃ একদম গ্রাম্য পরিবেশে কিন্তু নিপুণ পরিপাটি করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অপূর্ব খাবারের ব্যবস্থা রিসর্টের মধ্যে আছে। তরতাজা মনে বুক ভরে সতেজ-নির্মল অক্সিজেন নিয়ে খাবার পাতে পাবেন কলমি শাক, গয়না বড়ি, ঘণ্ট, চচ্চড়ি, ডালনা, ছেঁচকি, চোখা, অম্বলের মতো শহুরে ব্যাস্ততায় হারিয়ে যাওয়া বাংলার হেঁসেলের নানা জিভে জল আনা মুখরোচক পদ। এখানকার জৈবখামারে তৈরি সবজি দিয়ে সব রান্নাই বেশ সুস্বাদু। এর সঙ্গেই রয়েছে পাশ দিয়ে বয়ে চলা বাগদা নদী, পাখির ডাক— সব মিলিয়ে একটা মনমুদ্ধকর পরিবেশ। বিকেলে চা-বিস্কুটের সঙ্গেই তেল-চানাচুর দিয়ে মুড়ি মাখা আর পিয়াজী।
খরচঃ খরচ হয়তো একটু বেশি। তবে একদিনের জন্য গেলে হয়তো দ্বিতীয় দিনও থেকে আসতে মন চাইবে।
একটি কটেজের ভাড়া মোটামুটি ৩,৫০০-৪,০০০ টাকা। কটেজগুলি ৪ জনের থাকার উপযোগী। খাবার খরচ প্রতিদিন জন প্রতি মোটামুটি ১,০০০ টাকা, যার মধ্যে ৩ বেলার খাবার ধরা আছে। অর্থাৎ, মনচাষায় থাকা-খাওয়া মিলিয়ে প্রতিদিনের মাথাপিছু খরচ মোটামুটি ২২০০-২৫০০ টাকা।
খরচের কথা ছেড়ে দিন। ভালো গ্রাম্য পরিবেশে মনের আনন্দে ঘুরে আসি এক বা দু'দিনের জন্য।
সুত্রঃ মনচাষা ট্যুরিজম







COMMENTS