Parashuram Mandal - A burly-looking senior citizen past sixty-two. Looking at the appearance, it will seem to be 70 years old. An unshaven white bea..
রাজকুমার মুখার্জি, ব্লগSHOT: রায়কত পাড়াটা যেখানে প্রায় শেষ হব হব করছে, সেইখানে একটা ছোট টিনের চালের বাড়িতে পরশুরামের বাস। সামনে দিয়ে চলে গেছে একটা চারফুট চওড়া পায়ে চলা পথ - যার দুপাশে ঘাস আর আগাছার সহবাস। পায়ে চলার পথের একদিকে তিস্তার পাড়, অন্য দিকটা রাজবাড়ীর দিঘীর পাশ দিয়ে পিচ রাস্তায় উঠেছে।
পরশুরাম মন্ডল - বাষট্টি পার হয়ে যাওয়া খয়াটে চেহারার এক প্রবীণ নাগরিক। চেহারা দেখলে মনে হবে সত্তর ছুঁই ছুঁই। গালে না কামানো সাদা দাড়ি, মাথায় প্রায় সব পাঁকা এবং পাতলা হয়ে যাওয়া চুল - একা এই বাড়িতে থাকেন। বছর তিনেক আগে স্ত্রী রেনুকা মারা যায় জলপাইগুড়ি সরকারী হাসপাতালে। পেটে জল জমেছিল, ডাক্তারী ভাষায় যাকে বলে অ্যাসইটিস। পরশুরাম আর তার ছেলে সৈকত প্রায় একমাস হাসপাতাল - ঘর করেও রেনুকা কে বাঁচাতে পারেনি। চা বাগানের চাকরী তাই কম বেতন -- অতএব বিস্তর খরচ করে শিলিগুড়ি বা কলকাতায় কোন বেসরকারি নার্সিং হোমে চিকিৎসা করাবেন, সে সামর্থ কোথায়। গরীবের ভরসা সরকারী হাসপাতাল আর ভগবান। দুটোর কেউই শেষ রক্ষা করতে পারল না। সৈকতের মা রেনুকা, সংসারের সব মায়া ত্যাগ করে পাড়ি দিল না ফেরার দেশে।
সৈকত এখন কাজের খাতিরে গোহাটিতে থাকে। এক মাড়োয়ারি ভদ্রলোকের মিনারেল ওয়াটার তৈরির কারখানায় কাজ করে। কারখানার একটা ঘরে বাস, স্টোভ জ্বালিয়ে রান্নার কাজটা করে নেয়। মাসান্তে নয় হাজার টাকা মাইনে। মাস পয়লা, সৈকত তার বাবার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তিন হাজার টাকা পাঠাতে ভুল করে না। সৈকতের পাঠানো টাকা আর নিজের জমানো টাকার উপর যৎসামান্য সুদে, যাহোক করে পরশুরাম দিন গুজরান করে নেন।
পরশুরাম সকাল থেকে বাড়ির দালানে একটা ক্যাম্বিস চাদরের ইজি চেয়ার পেতে রাস্তার দিকে তাকিয়ে বসে থাকেন। একতলা টিনের চালের বাড়ী, একটা ঘর, একটা ছোট রান্নাঘর, একটা স্নানঘর - তারপাশে পাতকুয়া - ওটাই জলের একমাত্র উৎস, আর এই একফালি খোলা দালান। ঘরে আয়না লাগানো একটা কাঠের আলমারি যার গায়ে পালিশের জৌলুস কবেই চলে গিয়ে কালো কালো ছোপ পরতে পরতে লেগে রয়েছে। আছে একটা কাঠের টেবিল - যার মাথায় মধ্য যুগের একটা রঙ্গীন টিভি। টেবিলের দোসর একটা হাতল ভাঙা চেয়ার এবং তক্তপোষ।
দীর্ঘ প্রায় ছাব্বিশ বছর "পাতাঝরা" চা বাগানের মালবাবুর কাজ করেছেন পরশুরাম। কালচিনির পাতাঝরা চা বাগানের কোয়ার্টারে থাকতেন। রিটায়ার করার আগেই জলপাইগুড়ির রায়কত পাড়ার শেষ প্রান্তে দেড় কাঠা জমি কিনে রেখেছিলেন, পরে মাথা গোঁজার মত একটা ঠাঁই করে রেখেছিলেন। রেনুকা সাধ করে টগর ফুলের গাছ লাগিয়ে ছিল। সে গাছে আজ টগর ফুল ফোটে কিন্তু রেনুকা আর নেই। জমির শেষে কাঁটা তারের বেড়া, টাকার অভাবে পাঁচিল দেওয়া হয়নি বলে পরশুরামের আক্ষেপ ছিল। আজ মনে হয়, না হয়ে একপ্রকার ভালই হয়েছে। যাতায়াতের লোকজন দেখতে পান। যদিও এ তল্লাটে বাড়ী ওই গোটা কয়েক, অবশ্য পরিচিতি কারো সঙ্গেই বিশেষ নেই। পরশুরামের আর্থিক অবস্থা যে ভালো নয় সেটা সবার জানা, তাই সকলে পরশুরাম কে এড়িয়ে চলে। সামনে পড়ে গেলে "কি কেমন?" ব্যাস ওই টুকু। পরশুরাম সেটা বোঝেন, তিনিও আগ বাড়িয়ে কারো সঙ্গে কথা বলেন না।
একা পরশুরামের দিন বড় লম্বা। সকালে নিজে এক কাপ লাল চা বানিয়ে খান। তারপর সারাদিন ওই ইজি চেয়ারে বসে আকাশ পাতাল ভাবেন। ভাবার কি আর শেষ আছে। শীতের রোদ যখন তির্যক হয়ে দালানে এসে পড়ে, নিজেকে একটু সেঁকে নেন। দিনের কোন এক ফাঁকে আসে রীতা - রান্না করে দেয়, বাসন ধুয়ে দেয়, ঘর পরিষ্কার করে দেয়। রীতা - মদেশিয় বউ, বছর তিরিশ হবে, কি একটু কম। ওর অবস্থা পরশুরামের চাইতেও খারাপ। রীতার স্বামী টাউনে রিক্সা চালায়, সন্ধ্যে হতে না হতেই চোলাই খেয়ে বেহুঁশ। যা রোজগার তার বেশিটা নেশায় চলে যায়। রীতার তিনটে বাচ্ছা। বড়টা মেয়ে, বছর বারো বয়স - পরের দুটো ছেলে, একটা সাত অন্যটা পাঁচ। বড় মেয়েটার জিম্মায় বাকি দুটোকে রেখে কাজে বের হয়। রীতা তিন বাড়ী কাজ করে, ফাঁকে এসে পরশুরামের কাজ করে দেয়। বাটিতে মুড়ি আর গোটা কতক বাতাসা দিয়ে পরশুরাম কে জলখাবার দেয়। নিজে কোঁচরে একটু মুড়ি বাতাসা নিয়ে খায়। খেতে খেতে পরশুরামের কাছে কত গল্প করে। পরশুরাম শুনতে শুনতে নিজের মধ্যে হারিয়ে যান।
ছোট বয়সটা পরশুরামের ওদলাবাড়ি চা বাগানের পাশেই কেটেছে। গঞ্জের ইস্কুলে পড়তেন। সাইকেল চালিয়ে ইস্কুল যেতেন। রাস্তার দুপাশে চা বাগান যেন সবুজ গালিচা পাতা। পরশুরামের বাবা ছিলেন সেই ইস্কুলের বাংলার মাস্টার। বাবা পরশুরামকে প্রায়শই বলতেন - দেখ বাবা তোর নাম কেন পরশুরাম জানিস? পরশুরাম তার বাবা জমদগ্নির হত্যার প্রতিশোধ নিতে কার্তবির্যাজুনের সব পুত্রদের বধ করেন এবং এই ভাবেই একুশ বার সারা পৃথিবী নিক্ষত্রিয় করেন, সেই রকম তুই ও একদিন এক এক করে সারা পৃথিবীর সব লোককে স্বাক্ষর করবি। নিরক্ষরতা দুর করবি। বাবা কত গল্প বলতেন -- চাঁদ সওদাগরের গল্প, কচ - দেবযানীর গল্প, রাজা যযাতির গল্প। বাবার হাত ধরেই পরশুরামের বই পড়ার নেশা। খুব সাদামাটা ছেলে পরশুরাম একদিন কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের দ্বারে এসে পৌঁছালেন।
উচ্চমাধ্যমিকের ভূগোল পরীক্ষার ঠিক দুদিন আগে পরশুরামের মা হঠাৎ হার্টফেল করে মারা যান। পরশুরামের গলায় কাছা। পরশুরামের বাবা নিজে সঙ্গে করে ছেলেকে পরীক্ষার হলে নিয়ে গেছলেন। বাবা বলতেন "সুখ - দুঃখ এই নিয়েই জীবন। খোকন তুমি দুঃখটাকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সুখটাকে নিতে পারবে না। এরা একে অপরের পরিপূরক। দুঃখ সহ্য করার জন্য মনের জোর বাড়াতে হয়। জীবনে বহু দুঃখ আসবে, সেটাই স্বাভাবিক, তাকে সহ্য করে হাসি মুখে এগিয়ে যারা যায়, তারাই জীবনে সবচাইতে শান্তি পায়।"
-- দাদু, অ দাদু, মুড়ি গুলান খাওন লাগবো। চুপ মেরে বসি কি ভাবতাছোস ?
রীতার ডাকে সম্বিত ফিরে পান পরশুরাম।
- এই যে খাই মা।
রীতা বাসন নিয়ে কুয়োতলায় চলে যায়। পরশুরাম রীতার চলে যাওয়া দেখতে থাকেন। তিনি মেয়েটাকে মাইনে দিতে পারেন না, সে আর্থিক সামর্থ তাঁর নেই। কতবার বলেছেন "আমি তোকে মাইনে দিতে পারিনা, তুই অন্য কোথাও কাজ খুঁজে নে মা।" রীতা কানে নেবে না সে কথা। উল্টে রাগ দেখিয়ে বলবে "দাদু টাকা লে কি সগগে যাবো।"। শত দারিদ্রের মধ্যেও যে "দয়া" বলে বস্তুটা এখনও ওর মাঝে রয়ে গেছে, ভেবে অবাক লাগে।
রীতা কাজ করে চলে যায়। তির্যক রোদ আস্তে আস্তে উপর দিকে উঠতে থাকে। এবার স্নানে যেতে হয়। স্টোভ জ্বালিয়ে এক কেটলি জল বসিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন। রান্নাঘরের জানলা দিয়ে দূরের চা বাগানটা দেখা যায়। চা বাগানের দিকে চোখ পড়লেই পাতাঝরা বাগানের দিনগুলোর কথা ছেঁড়া ছেঁড়া হয়ে ভেসে উঠে। শীতের সময় চা বাগানের চাইতে বেশী কাজ হত ফ্যাক্টরিতে। মেশিন সব পরিষ্কার হত, কাজের চাপ কিছুটা কম থাকতো। বাগানের ছোট বড় সব ম্যানেজাররা পালা করে ছুটিতে যেত। কোন এক ফাঁকে রেনুকা আর সৈকতকে নিয়ে চলে আসতেন জলপাইগুড়ি। সদ্য কেনা ফাঁকা জমির পাশে দাঁড়িয়ে পরশুরাম - রেনুকা বাড়ির নকশা করতেন "স্বপ্নের দুর্গ"। দুপুরে রুবী হোটেলে কাঁসার থালায় গরম গরম ভাত, বৈরালি মাছের ঝাল। করলার ধার দিয়ে চলে আসতেন তিস্তার বাঁধে। তখন সৈকত বড়জোর বারো কি তেরো। সৈকত প্রশ্ন করতো "বাবা আমাদের এখানে বাড়ী হবে ? "জলপাইগুড়ি স্টেডিয়াম দেখে সৈকত কি উত্তেজিত। বলতো "বাবা একদিন এখানে সৌরভ শচীন খেলবে"। সেই স্টেডিয়াম, তিস্তার বাঁধ - সব আছে। শুধু সৈকত থেকেও কাছে নেই আর রেনুকা -- সবার আড়ালে মিটিমিটি করে হাসছে।
কেটলির মুখ দিয়ে ধোঁয়া বেরোচ্ছে দেখে তাড়াতাড়ি একটা গামছা দিয়ে কেটলির হাতল ধরে স্নানঘরে চলে গেলেন। স্নান সেরে বাসি কাপড় কেচে তারে শুকোতে দিয়ে খেতে বসলেন। রীতা যা রাঁধে তাই অমৃত। নিজের মনে করে রান্না করে দেয়। পরশুরাম রুটি একদম খেতে পারেন না। দুবেলা তাঁর ভাত খাওয়ার অভ্যাস। রেশনের মোটা চাল, তাই সই। আসন পেতে এক গেলাস জল গড়িয়ে নিয়ে বসেন। ভাত, কাঁচালঙ্কা - সর্ষের তেল - নুন দিয়ে মাখা আলু সেদ্ধ, শিম - বেগুন - মুলো - কাঁচকলার ঝোল। পাতাঝরা তে থাকার সময় রেনুকা কত যত্ন করে খেতে দিত। প্রথমে একটু ভাত সঙ্গে কোন একটা তেঁতো, তারপর আবার একটু ভাত সঙ্গে ডাল আর ভাজা বা তরকারি, সেটা খাওয়া হলে আবার একটু ভাত মাছ। রোজ খেতে বসার সময় রেণুকার কথা খুব মনে পড়ে। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে যায়। সৈকত বেচারা কি খায়, কখন খায় - কে জানে।
খেয়ে ন্যাতা দিয়ে পরিপাটি করে জায়গাটা মুছে ফেলেন। রেনুকা যেমন করে মুছতো -- প্রথমে একটু জলের ছড়া দিয়ে তারপর মুছে ফেলা। বাসনগুলো রান্নাঘরের কোনায় রেখে দিলেন। শীতের দিন, ভাতে জল না দিলেও ঠিক থাকবে। হাঁড়ি ঢাকা দিয়ে রান্নাঘরে শিকল তুলে দিলেন। ইজি চেয়ারে এসে বসলেন। দূরে ফেরিওয়ালা হাঁক দিচ্ছে "শিলে কাটাউ - উ - উ - উ"। ফেরিওয়ালা এদিকে আসে না। গলির মোড়ে একটা বড় দুতলা বাড়ি আছে, তারপর গোটা কয়েক বাড়ি, তারপর অনেকটা ফাঁকা জায়গা তারপর পরশুরামের বাড়ি। গলির শেষ মাথায় জেলে পাড়া -- সেখানে ঝুপড়ি বস্তি, ওই বস্তিতে রীতার সংসার। যদিও এই রাস্তা ছাড়াও ওদের একটা ইঁট বিছানো ভালো রাস্তা আছে, সেটা অবশ্য একটু ঘুর পথ।
শীতের দুপুর ছোট হয়ে আসছে। উঠে পড়লেন। গায়ে একটা পুরোহাত সোয়েটার, মাথায় হনুমান টুপি, পাজামার উপর প্যান্ট, পায়ে মোজা পরে জুতোটা পায়ে গলিয়ে বেরিয়ে পড়লেন, কিছুটা হেঁটে আসবেন। এখানে এসে একদম প্রথম দিকে, তখনও রেণুকার শরীর ভেঙে যায় নি, দুজনে হাঁটতে বেরোতেন সকালে। জেলখানার সাইরেন বেজে উঠতো। বুঝতেন ছটা বাজে, কয়েদিরা "জনগণ মন..." গাইত - মাইকে শোনা যেত। হাঁটতে হাঁটতে করলা ব্রীজ পেরিয়ে বাজারের দিকে চলে আসতেন। কোনদিন আবার রাস্তা বদলে চলে যেতেন জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের দিকে। বড় রাস্তা দিয়ে হু হু করে ট্রাক ছুটে চলতো, রেণুকার হাত ধরে রাস্তা পার করে দিতেন।
সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে অনেকটা হেঁটে চলে এসেছেন। দুর্গা মন্দির। সন্ধ্যে হয়ে গেছে, এদিকটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা। অন্ধকার নেমে গেছে। মন্দিরের সিঁড়ির নীচে জুতো খুলে পাঁচ ছটা সিঁড়ি ভেঙে মন্দিরের চাতালে এসে বাবু হয়ে বসলেন। বাড়ী ফিরে কি করবেন। টিনের চালের উপর দিয়ে ভাম দৌড়ে যাবার আওয়াজ শোনা ছাড়া আর তো কিছু করার নেই। আজকাল টিভি দেখতে ইচ্ছে করে না। আজ ঠান্ডাটা একটু বেশী মনে হচ্ছে। দুর্গা প্রতিমার দিকে হাতজোড় করে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন। কি রকম একটা ঘোরের মতন লাগছে। ঠান্ডাটা আজ বেশ একটু বেশিই। প্রতিমার মুখের মধ্যে পরশুরাম রেণুকার মুখ দেখতে পাচ্ছেন। সেই চোখ, সেই নাক, সেই কপাল, সেই মুখ। পাতাঝরা বাগানের কোয়ার্টারের বেড়া ধরে যেমন অপেক্ষা করত, অবিকল সেই রকম।
নিরালা মন্দিরে একা পরশুরাম সঙ্গে রেনুকা। কতদিন বাদে রেনুকা কে সামনে দেখছেন। উফ্, ঠাণ্ডা কি আরও বাড়ল না কি ! এতো শীত করছে কেন ? রেনুকা তুমি আমায় ছেড়ে কি করে আছো ? আমি কেন পারছিনা তোমায় ভুলতে ? বাবা বলতেন দুঃখ সইতে হয় - আমি কেন সইতে পারছি না ? বড্ড শীত রেনুকা, একটা চাদর টাদর দাও। কি পিটপিট করে দেখছো? বুকের মাঝে একটা পাথর চেপে বসছে, গলার কাছে কি যেন একটা দলা পাকিয়ে উঠছে। সৈকত, আয় বাবা, একবারটি দেখে যা তোর মা এসেছে। সৈকত, সৈকত। একটা শব্দও গলা দিয়ে বের হচ্ছে না।
পরদিন সকালে খবরের কাগজের হেড লাইন:
খুব ভালো লাগলো গল্পটা পড়ে।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ
মুছুননামহীন খুব ভালো । গল্পে ্একটা গভীরতা আছে ।
উত্তরমুছুন